সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ২৪ মাঘ ১৪২৯, Monday, February 6, 2023
ফেসবুকের বিরুদ্ধে দেড় হাজার কোটি ডলারের মামলা রোহিঙ্গাদের

ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন রোহিঙ্গা। ফেসবুক নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে রোহিঙ্গাবিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের প্রচারকে প্রশ্রয় দিয়েছে এই অভিযোগে দেড় হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে তারা। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর দমন অভিযানে অন্তত ১০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে বলে অনুমান করা হয়। রোহিঙ্গাদের অভিযোগ নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা চালানোর মনোভাবকে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে প্রশ্রয় দিয়েছে শীর্ষ সামাজিক মাধ্যমটি।
রোহিঙ্গাদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি নাম পাল্টে ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকরপোরেটেড’ হওয়া ফেসবুক এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। রোহিঙ্গারা বলছে, ‘বছরের পর বছর বিদ্বেষমূলক ও বিপজ্জনক ভুয়া তথ্যের প্রচার’ নিজ প্ল্যাটফর্মে চলতে দিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন মামলার বাদিপক্ষের ব্রিটেনভিত্তিক প্রতিনিধিরা।
আইনজীবীদের পাঠানো ওই চিঠি দেখার সুযোগ হয়েছে বিবিসির। চিঠিতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুকের অ্যালগরিদম রোহিঙ্গাবিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে বাড়িয়ে তুলেছে। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত মডারেটর এবং তথ্য যাচাইকারী নিয়োগে ‘বিনিয়োগ’ করতে ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ডাক দেয়া পোস্ট এবং অ্যাকাউন্ট মুছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদমাধ্যম এবং দাতব্য সংস্থাগুলো সতর্ক করলেও ‘সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নিতে’ ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক।
যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিকোতেও ফেসবুকের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ করেছেন রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবীরা। ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট একটি দেশের বাজারে আরো ভালোভাবে ঢোকার জন্য রোহিঙ্গাদের জীবন’ জলাঞ্জলি দিতেও ফেসবুকের বাধেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে আসা ২০১৩ সালের একাধিক ফেসবুক পোস্ট আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন আইনজীবীরা। তার একটিতে বলা হয়েছে, ‘হিটলার যেভাবে ইহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, আমাদেরও তাই করতে হবে।’
আরেকটি পোস্টে বলা হয়েছে, তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দাও যেন আল্লাহর সাথে তাড়াতাড়ি দেখা করতে পারে ওরা।’ মিয়ানমারে ফেসবুকের নিয়মিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা দুই কোটির বেশি। এর বড় একটা অংশের জন্য সংবাদ পাওয়া এবং শেয়ার করার একমাত্র উপায় সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মটি। রোহিঙ্গা বিরোধী সহিংসতা ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বন্ধের জন্য যথেষ্ট না করার অভিযোগ ২০১৮ সালেই স্বীকার করে নিয়েছিল ফেসবুক।